বৃহস্পতিবার, ৩১ Jul ২০২৫, ০২:৫৬ অপরাহ্ন

সখিপুরের কাঁচিকাটায় বেড়িবাঁধ নির্মানের দাবিতে ৭ কিমি জুড়ে মানববন্ধন

সখিপুরের কাঁচিকাটায় বেড়িবাঁধ নির্মানের দাবিতে ৭ কিমি জুড়ে মানববন্ধন

মো: নাসির খান (শরীয়তপুর) থেকে:  শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুরের কাঁচিকাটায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে ও স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবিতে ৭ কিমি জুড়ে  মানববন্ধন করেছে বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলের কাঁচিকাটা ইউনিয়নের বাসিন্দারা।

৩ মে শনিবার সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত কাঁচিকাটা ইউনিয়নের পদ্মার পাড়ে সাত কিলোমিটার এলাকা জুড়ে একাধিক পয়েন্টে ফেস্টুন ও ব্যানার হাতে নিয়ে এ মানববন্ধন করা হয়।

চরাঞ্চলের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও স্থানীয়রা তাদের কাজকর্ম বন্ধ রেখে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, কৃষক, শ্রমিক ও জেলেসহ সকল শ্রেণি পেশার প্রায় ১০ – ১৫ হাজার নারী-পুরুষ এ মানববন্ধনে অংশ নেন।

এছাড়াও শরীয়তপুর-২ (নড়িয়া ও সখিপুর) আসনের সম্ভাব্য সংসদ সদস্য প্রার্থী জাতীয় চিকিৎসক সংগঠন ‘ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরাম (এনডিএফ)’-এর সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. মাহমুদ হোসেন বকাউল উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় মানববন্ধনকারীদের ‘দাবি মোদের একটাই, স্থায়ী বেড়িবাঁধ চাই’, ‘রক্ত লাগলে রক্ত দেব, বালু খেকোদের কবর দেব’, ‘বানের জলে ডুবি ভাসি, শুনেছ কি আর্তনাদ?’, বেঁচে থাকার জন্য চাই টেকসই বেড়িবাঁধসহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায়।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ‘আমাদের দাবি, কাঁচিকাটাকে বালুমহল ঘোষণার পায়তারা বন্ধ করতে হবে, পদ্মা নদী থেকে বৈধ বা অবৈধ হোক সব প্রকার বালু উত্তোলন বন্ধ করতে হবে এবং কাঁচিকাটা ইউনিয়নের উত্তর তীর রক্ষায় টেকসই স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করতে হবে। আমাদের দাবি মানা না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেয়া হবে।’

চরাঞ্চলের বাসিন্দারা মানববন্ধন শেষে পদ্মার পাড়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে কাঁচিকাটা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান এস.এম.এ হামিদ সরদার বলেন, ‘কাঁচিকাটা ইউনিয়নটি শরীয়তপুর জেলার মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পদ্মা নদীর মাঝখানে অবস্থিত। এ চরাঞ্চলে প্রায় পঞ্চাশ হাজার মানুষ বসবাস করে।

বালু খেকোরা পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে কাঁচিকাটা চরটি আজ হুমকির মুখে। পদ্মার ভাঙনের চরাঞ্চলের বাসিন্দাদের বসতবাড়ি ও ফসলি জমিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বিলীন হয়ে যাচ্ছে। তার উপর আবার প্রশাসনের পক্ষ থেকে কাঁচিকাটাকে বালুমহল ঘোষণার পায়তারা চলছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’

সখিপুর থানা যুবদলের সহ সভাপতি মাহবুব আলম বাহাদুর কঠিন হুশিয়ারী দিয়ে বলেন, ‘পদ্মার চরে আমাদের বসবাস। প্রশাসন পদ্মা নদীতে বালু মহল ঘোষণা দিয়েছে শুনেছি। এছাড়া ড্রেজড মেটারিয়াল নিলামে দিয়েছে। তাই বালু খেকোরা অনিয়ন্ত্রিতভাবে পদ্মায় অবাধে ড্রেজার দিয়ে বালু কেটে বিক্রি করছে, এতে গভীরতা সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে পাড় ভাঙন শুরু হয়েছে। তাই বালু কাটা বন্ধ ও স্থায়ী বেড়িবাঁধের দাবি জানাচ্ছি।’ বালু কাটা বন্ধ না হলে আগামীতে কঠিন কর্মসূচি দেয়া হবে।

বালুমহল সম্পর্কে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন বলেন, ‘বালুমহল ইজারার ব্যাপারে প্রাথমিকভাবে কাজ চলমান রয়েছে। এখন পর্যন্ত ফাইনাল হয়নি। বিভিন্ন দফতর থেকে রিপোর্ট নেয়া হচ্ছে। ফাইনাল রিপোর্ট আসলে সেভাবেই কাজ করা হবে।’

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com